হজরত উমর রাঃ এর ঈদের শপিং

 


মদিনার অলিতে-গলিতে তখন ঈদের আমেজ। ঈদ উপলক্ষে  মদিনার ঘরে ঘরে বইছে অনাবিল খুশির হাওয়া। বাচ্চাদের জন্য বানানো হচ্ছে নতুন নতুন জামাকাপড়। আর মাত্র এক দিন বাকি আছে ঈদের!


এদিকে খলিফা ওমর রা. এর ঘরে ঈদের কোন আনন্দ নেই। নতুন জামা-কাপড় বানানোর হিড়িকও নেই।


ঈদের আগের দিন খলীফা হযরত ওমর রা. এর স্ত্রী উম্মে কুলসুম তাকে বললেন, ‘আমাদের জন্য ঈদের নতুন কাপড় না হলেও চলবে, কিন্তু ছোট বাচ্চাটি ঈদের নতুন কাপড়ের জন্য কাঁদছে’।


খলীফা বললেন, ‘আমার নতুন কাপড় কেনার সামর্থ্য নেই’। খলীফা পত্নী উম্মে কুলসুম খলীফার আগামী মাসের বেতন থেকে অগ্রিম নেয়ার জন্য তাকে অনুরোধ করলেন।


তখন সাহাবী হযরত আবু উবাইদা মদিনার রাষ্ট্রীয় কোষাগার ‘বায়তুল মাল’ দেখাশুনা করতেন। খলীফা ওমর রা. হযরত আবু উবাইদাকে খলীফার এক মাসের অগ্রিম বেতন দেয়ার জন্য চিঠি পাঠালেন।


সমগ্র মুসলিম জাহানের খলীফা, অর্ধ পৃথিবী শাসন করছেন যিনি, তার এ ধরণের চিঠি পেয়ে আবু উবাইদা রা. এর চোখে পানি চলে আসল।


উম্মতে আমীন হযরত আবু উবাইদা রা. বাহককে টাকা না দিয়ে সিদ্ধান্ত চেয়ে চিঠি লিখলেন, ‘আমীরুল মুমিনীন! অগ্রিম বেতন বরাদ্দের জন্য দুটি বিষয়ে আপনাকে ফয়সালা দিতে হবে। প্রথমত আগামী মাস পর্যন্ত আপনি বেঁচে থাকবেন কি না?


দ্বিতীয়ত, বেঁচে থাকলেও আপনার খিলাফতের দায়িত্বে বহাল থাকবে কিনা?’


হযরত আবু উবাইদার চিঠি পাঠ করে হযরত ওমর রা. অঝোরে কাঁদলেন। চোখের পানিতে খলিফার দাঁড়ি ভিজে গেলো। হাত তুলে হযরত আবু উবাইদার জন্য দোয়া করলেন, ‘আল্লাহ আবু উবাইদার উপর রহম কর, তাঁকে হায়াত দাও’।


হযরত উমর রাঃ ঈদুল ফিতরের দিন তাহার পুত্রের পরিধানের র্জীণ পোষাক দেখিয়া কাদিয়া ফেলিলেন। পুত্র কারণ জিজ্ঞসা করিলে তিনি বলিলেন, বৎস! অন্যান্য কিশোর বালকেরা ঈদের দিন তোমাকে এই পোশাক পরিহিত দেখিবে,আমার ভয় হয় ইহাতে তোমার মন ভাংগিয়া যায় কি না। হযরত উমর রাঃ সাহেবের পুত্র জওয়াবে বলিলেন, বাবা!মন ঐ ব্যক্তিরই ভংগিতে পারে যে আল্লাহ তায়ালা সন্তুষ্টি হাছিল করিতে পারে নাই কিংবা যে সন্তান তদীয় মা-বাবার সন্তোষ লাভ করিতে পারে নাই, আমি তো আশা রাখি, আপনার সন্তুষ্টি আমার প্রতি রহিয়াছে এবং সেই অছিলায় আল্লাহ পাকও আমার প্রতি সন্তুষ্ট রহিয়াছে। ইহা শুনিয়া হযরত উমর রাঃ সাহেব আরও কাঁদিলেন এবং ধী-মান সন্তানকে বুকে জড়াইয়া ধরিলেন এবং সন্তানের জন্য আন্তঃস্হ থেকে হইতে দু'আ করিলেন।

📝📝 মুফতি সাইফুল ইসলাম ফারুকী। 

Comments

Popular posts from this blog

পাগড়ী পড়া সুন্নত।

রাসুল সাঃ গায়েব জানে কিনা

কবর বা মাজার জিয়ারত কে যারা মানে না তারা হল কুখ্যাত মোনাফেক।