রাসুল সাঃ গায়েব জানে কিনা
🌹রাসুল সাঃ গায়েব জানে কিনা🌹
🔶গায়েব শব্দের অর্থ হচ্ছে, অদৃশ্য,
অনপুস্হিতি,অন্তর্ধান।
🔶পারিভাষিক অর্থ প্রসগে, ইমাম জালালুদ্দিন সুয়ূতি(রঃ) ইমাম ফখরুদ্দিন রাজী (রঃ) বলেন,
وهو قول جمهور المفسرين أن الغيب هوالذي يكون غاأبا عن الحا سة
অধিকাংশ মুফাসসিরীনে কেরাম এর বক্তব্য হল,নিশ্চয় গায়েব হচ্ছে এমন বিষয় যা পন্ব ইন্দ্রিয় সমূহ হতে অদৃশ্য।
🔶মানুষের ইন্দ্রিয় হচ্ছে ৫টি। যথা,১.নাক২.কান,৩.চোখ,৪.জিহ্বা, ৫.তক্ব। যেমন, চোখে দেখা যায় না। কানে শুনা যায় না। নাক দিয়ে খারান নেওয়া যায় না । জিহ্বা দিয়ে স্বাদ গ্রহণ করা যায় না,ও হাত দিয়ে দরা যায় না, তাকে গায়েব বলে।
🔶🔶 গায়েব দুই প্রকার।
১.গায়েবে জাতি। ২.গায়েবে আতায়ী।
যেমন, ইমাম ফখরুদ্দিন রাজী (রঃ)বলেন
هذا الغيب ينقسم إلى ما عليه دليل ،وإلى ما ليس عليه دليل
গায়েবের এক প্রকারের যুক্তি প্রমাণ রয়েছে, আরেক প্রকারের কোন যুক্তি প্রমান নেই।(তাফসিরে কবীর ২য় খন্ড ৩১
১.📖সুরা,নামল ৬৫,নং আয়াত।
قُل لَّا يَعْلَمُ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ الْغَيْبَ إِلَّا اللَّهُ
বলুন, আল্লাহ ব্যতীত নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে কেউ গায়বের খবর জানে না।
২.📖সুরা নামল ৭৫নং আয়াত।
وَمَا مِنْ غَائِبَةٍ فِي السَّمَاء وَالْأَرْضِ إِلَّا فِي كِتَابٍ مُّبِينٍ
আকাশে ও পৃথিবীতে এমন কোন গোপন ভেদ নেই, যা সুস্পষ্ট কিতাবে না আছে।
৩.📖সুরা, রহমান ১,২ নং আয়াত।
(1 الرَّحْمَنُ
করুনাময় আল্লাহ,
(2 عَلَّمَ الْقُرْآنَ
শিক্ষা দিয়েছেন কোরআন,
৪.📖সুরা,জিন ২৬,২৭ নং আয়াত।
عَالِمُ الْغَيْبِ فَلَا يُظْهِرُ عَلَى غَيْبِهِ أَحَدًا
তিনি অদৃশ্যের জ্ঞানী। পরন্ত তিনি অদৃশ্য বিষয় কারও কাছে প্রকাশ করেন না।
إِلَّا مَنِ ارْتَضَى مِن رَّسُولٍ
তাঁর মনোনীত রসূল ব্যতীত।
৫.📖সুরা, তাকবীর ২৪ নং আয়াত।
24 وَمَا هُوَ عَلَى الْغَيْبِ بِضَنِينٍ
তিনি অদৃশ্য বিষয় বলতে কৃপনতা করেন না।
৬.📖সুরা,আল- ইমরান ৪৯নং আয়াত
وَأُنَبِّئُكُم بِمَا تَأْكُلُونَ وَمَا تَدَّخِرُونَ فِي بُيُوتِكُمْ
আর আমি তোমাদেরকে বলে দেই যা তোমরা খেয়ে আস এবং যা তোমরা ঘরে রেখে আস।
🔶এ আয়াত থেকে বোঝা যায়, হজরত ঈসা (আঃ) যদি তার উম্মতেরা কি খেয়েছে এবং ঘরে কি রেখেছে তা যদি তিনি বলেন দিতে পারে, তাহলে আমরাদের নবী সাঃ কেন গায়েব জানেনা। নিসন্দেহে রাসূল সাঃ গায়েব জানেন।
৭.📖সুরা,নিসা ১১৩নং আয়াত।
وَأَنزَلَ اللّهُ عَلَيْكَ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَعَلَّمَكَ مَا لَمْ تَكُنْ تَعْلَمُ
আমি আপনার উপর কিতাব ও ইহা বুঝার ইলিম দান করেছি, আপনাকে এমন বিষয় শিক্ষা দিয়েছেন, যা আপনি জানতেন না।
🔶অনেকেই বলে যে রাসুল সাঃ যতটুকু যানেন ,দেখেন আল্লাহ তায়ালা কুরআনে এই আয়াতে ما(মা) শব্দটি হচ্ছে عام (আম) ব্যাপক অর্থে ব্যবহার হয়ে থাকে। অর্থাৎ,আল্লাহ তার হাবীবকে এমন ব্যাপক ইলিম দান করেছেন যে তার অনির্দিষ্টতার সীমানা বুঝানোর জন্য আল্লাহ তায়ালা ما (মা) শব্দটি ব্যবহার করেছেন। এর সীমানা মহান আল্লাহ তায়ালায় সবচেয়ে ভালো জানেন।
৮.📖মুস্তাদরাকে হাকেম,হাঃ ৩৮৮৩ বায়,সুনানে কুবরা,হাঃ১৩৩৩৭ মুসনাদে আহমদ, হাঃ২১৫১৬ সুনানে ইবনে মাজাহ হাঃ৪১৯০ তিরমিজি শরীফ হাঃ২৩১২
عن ابي ذر قال قال رسول الله إني أرى ما لا ترون ، وأسمع ما لا تسمعون
হজরত আবু যার গিফারী (রাঃ)বলেন, রাসূলে পাক (সাঃ) বলেন, আমি যা দেখি তোমরা তা দেখনা! এবং আমি যা শুনি তোমরা তা শুননা।
৯📖ছহীহ বুখারী, হাঃ ৩৬৭৫ তিরমিজি হাঃ৩৬৯৭ মেসকাত, ৫৬৩পৃঃ মেরকাত ১১তম খন্ড, ২৩৪পৃঃ মুসনাদে আহমদ
عن أنس بن ما لك ، قال صعد رسول الله صلي الله عليه وسلم أحدا، واتبعه ابو بكر وعمر وعثمان، فقال له رسول الله صلى الله عليه وسلم : اثبت أحد، فانما عليك نبي، وصد يق،وشهيدان
হজরত আনাস (রাঃ) বর্ণনা করেন,নিশ্চয় আল্লাহর রাসুল (সাঃ) আবু বক্কর ছিদ্দিক (রাঃ) উমর (রাঃ) উসমান (রাঃ) উহুদ পাহাড়ে দাঁড়ালেন। ফলে উহুদ পাহাড় নড়ে উঠল। রাসূল (সাঃ) তার পা দ্বারা উহুদ পাহাড়ে আঘাত করলেন ও বললেন, থাম হে উহুদ! কেননা তোমার মাঝে একজন নাবী, একজন সিদ্দিক ও দুইজন শহিদ রয়েছে।
🔶এ হাদিস থেকে বুজা যা যে কোন সাহাবি কি বাবে মারা যাযে সেটাও রাসূল সাঃ জানতেন, এর কম আরো অনেক হাদিস আছে। এখানে সংক্ষেপে লেখলাম। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকল কে বুঝার তৌফিক দান করুক, আমিন।
🌹মুফতি সাইফুল ইসলাম ফারুকী🌹
Comments
Post a Comment